নরওয়ে ভিসা আবেদন করার নিয়ম ২০২২ Norway Visa Application 2022 । নরওয়ের অফিসিয়াল নাম কিংডম অব নরওয়ে। রাজধানী অসলো। নরওয়ের মুদ্রাকে ক্রোনার বলা হয়। ১ ক্রোনারে দাঁড়ায় বাংলাদেশি ১০ টাকা। পৃথিবীর অন্যতম ব্যয়বহুল দেশ নরওয়ে এবং এরা নিজেদের প্রাইভেসিকে খুবই প্রাধান্য দেয়। পৃথিবীর গুটিকয়েক দেশের মধ্যে নরওয়ে রয়েছে যারা ”টিউশন ফি ” ফ্রিতে এডুকেশন দিচ্ছে। তবে সব কোর্সে না। এবং এই কারণেই অ্যাডমিশন আর ভিসা পাওয়াটাও কঠিন। তবে, অসম্ভব না।
অ্যাডমিশন অ্যাপ্লিকেশন প্রসেসিং এর জন্য ওদের নিজস্ব ডেটাবেইজ আছে। এখানে (fsweb.no/soknadsweb/v elgInstitusjon.jsf) নরওয়ের ভালো বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, স্কুলগুলোর তালিকা পাওয়া যাবে। অ্যাপ্লিকেশন করতে হলে এই ওয়েবসাইটে প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আলাদা একাউন্ট ওপেন করতে হয়। এবং সেই একাউন্টের মাধ্যমেই ডকুমেন্টস আপলোড করতে হবে। পছন্দের কোর্স বাছাই করার জন্যও আগ্রহী স্টুডেন্টরা এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করে থাকেন।
নরওয়ের অ্যাপ্লিকেশন সেশন বছরে একবার। সাধারণত অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত চলে এই সেশন। এই সময়ের মধ্যে আবেদন না করলে এক বছর পিছিয়ে যেতে হবে। আর অবশ্যই আইএলটিএস করতে হবে। ব্যান্ড স্কোর ছয়ের যত ওপরে থাকবে সম্ভাবনাও তত বেড়ে যাবে। আপ্লিকেশন এর পর বেশ কয়েক মাস, আনুমানিক মার্চ-এপ্রিল পর্যন্ত সময় লাগে এডমিশন মিললো কিনা সেটা জানতে। অবশ্যই ইমেইল চেক করতে হবে প্রতিদিন।
বাংলাদেশে নরওয়েজিয়ান এম্বেসি নেই। তবে কন্স্যুলেট আছে! সুবিধা হচ্ছে, ঢাকায় ডেনমার্ক এম্বেসি নরওয়ের ভিসা প্রসেস করে! আর অবশ্যই আপনাকে ইমেইলে কিছু ওয়েবসাইটের লিঙ্ক পাঠানো হবে। যেখানে ভিসার আবেদনে কি কি ডকুমেন্টস লাগবে তার তথ্য থাকবে।
এরপর “ভিএফএস গ্লোবালে” আপনার যাবতীয় পেপারস জমা দিন। এসমস্ত যাবতীয় তথ্য আপনাকে নিয়মিত ই-মেইলে জানানো হবে। আপনার পেপার গুলো এরপর ডেনিশ এম্বেসির মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করবে ইউডিআই (UDI)। নরওয়েজিয়ান ইমিগ্রেশন অথরিটির সংক্ষেপ হলো ইউডিআই। (www.udi.no/en) ওয়েবসাইটে নরওয়ের ইমিগ্রেশন নিয়ে তথ্য রয়েছে। স্টুডেন্ট ভিসা ছাড়াও সেখানে অনান্য ক্যাটাগরিতে রয়েছে নরওয়েতে আসার নির্দেশনা।
তবে ভিসা পাওয়ার আগে একটা জটিল ধাপ পেরোতে হবে। আর সব দেশের মতোই নরওয়ের ক্ষেত্রেও থাকা-খাওয়ার খরচ বাবদ বেশ কিছু টাকা ব্যাংকে জমা রাখতে হয়।
ডেনিশ এম্বেসি থেকে এক-দুই মাসের এন্ট্রি ভিসা দেওয়া হবে। নরওয়েতে এসেই আপনার পুলিশ স্টেশনে রিপোর্ট করতে হবে। বাংলাদেশে বসেই পুলিশ স্টেশনে অ্যাপয়েন্টমেন্টের তারিখ ঠিক করতে পারবেন। অথবা যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসবেন তারাও সব ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টদের একাট্টা করে পুলিশ স্টেশনের কাছ থেকে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেয়। সেক্ষেত্রে সময় কিছুটা বেশি লাগে। এরপর আপনাকে দেওয়া হবে এক বছরের জন্য রেসিডেন্স পারমিট! যার মাধ্যমে আপনার জন্য খুলে যাবে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এর অন্তর্ভুক্ত দেশগুলো ভ্রমণের সুযোগ।
সপ্তাহে বিশ ঘন্টা ওয়ার্ক পারমিট রয়েছে স্টুডেন্টদের জন্য। তবে নির্ধারিত ঘন্টার অতিরিক্ত সময় কাজ করলে অথবা কোনো ভাবে প্রতারণার দায়ে ফেঁসে গেলে পরের বছর ভিসা পাওয়ায় শঙ্কা দেখা দিতে পারে। আরও একটা বিষয় জানিয়ে দেই, নরওয়েজিয়ান ভাষার বেশ গুরুত্ব আছে। ভাষা জানলে চাকরি পাওয়া সহজ। আর ঘন্টা প্রতি বেতন কাঠামো অনান্য দেশের তুলনায় ঢের বেশি।
নরওয়েতে যেসব সেক্টরে বেশি বেতন দেয়া হয়-
কৃষি ও ফার্মিং, কনস্ট্রাকশন, ক্লিনিং স্টাফ, সিফুড ওয়ার্কার্স, ইলেকট্রনিক্স হসপিটালিটি, রিসার্চ।
একজন গবেষক ৪৫০০০০ ক্রোনার করে আয় করতে পারে। চিকিৎসকদের কমপক্ষে ৪ লাখ ৫০ হাজার ক্রোনার থেকে ৫০ হাজার ক্রোনার বাৎসরিক বেতন হয়ে থাকে।যারা অন্যান্য সেক্টরে কাজ করে থাকে তাদের সবার কমপক্ষে বেতন শুরুতেই ১৬৮ ক্রোনার। তবে বাস/ট্রাক ড্রাইভারের বেতন বছরে প্রায় ৪ লাখ ১০ হাজার ক্রোনার থেকে ৪ লাখ ৪০ হাজার ক্রোনার পর্যন্ত হয়ে থাকে। আর যারা ট্যাক্সি চালান তাদের আয় আরও বেশি হয়ে থাকে। বছরে প্রায় ৫০ হাজার থেকে ৭০ হাজার ক্রোনার।